আইবিএস রোগের চিকিৎসায় করণীয়

আইবিএস খাদ্যনালির একটি রোগ। সারা বিশ্বে প্রায় ১১ ভাগ লোক এই সমস্যায় ভোগেন। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ আমেরিকায়, যেখানে প্রায় ২১ ভাগ মানুষের মধ্যেই এই রোগ দেখা যায়। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় এর সংখ্যা কিছুটা কম যা প্রায় ৭ ভাগ।

২০-৪০ বছর বয়সী মানুষের বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এ সমস্যাটি বেশি দেখা যায়।সাধারণত অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে এই রোগ হয়। জীবনযাপনের কিছু পরিবর্তন আনলে রোগ থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া যায়। এ রোগ যেমন অভিনব ধরনের। চিকিৎসাও তেমনি অভিনব ধরনের।

এখানে যদি মানসিক অস্থিরতা, মানসিক সমস্যা এবং আচরণগত সমস্যা প্রধান কারণ হয়, তাহলে এগুলোর সমাধান করতে হবে। রোগীকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করতে হবে। মানসিকভাবে যদি তাকে আশ্বস্ত করা যায়, তাতে সমস্যার সমাধান হবে। তাতে শরীর থেকে মনের চাপটা কম পড়ে। এরপর আইবিএসটা অনেকটা ঠিক হয়ে গেছে।

আইবিএসের নানা ধরন আছে। কারো হচ্ছে পাতলা পায়খানা বা অতিরিক্ত মলত্যাগের ধরনটা বেশি। একে ডাইরিয়াল টাইপ বলা হয়। কারো কারো কোষ্ঠকাঠিন্যের ধরনটা বেশি। আমরা একে বলি কনস্টিপেটিং টাইপ। তো কোন ধরনের সেটা আগে বিচার করতে হবে।

বিচার করার পর যদি দেখা যায় ডাইরিয়াল টাইপ হয়, অবশ্য এ ধরনের রোগী বেশি হয়, বেশি বেশি পায়খানা হচ্ছে, বারবার পায়খানা হচ্ছে এবং মল নরম হয়ে যাচ্ছে। প্রথমেই খাবারের ধরন প্রাধান্য পাবে। দুধ, শাক, ঝাল তেল এগুলো খাবে না। কারো কারো বিভিন্ন ধরনের খাবারে উপকার হয়। কারো কারো বেল খেলে খুব লাভ হয়। কাঁচকলা খেলে খুব লাভ হয়। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলেও খুব ভালো কাজ হয়।

যেহেতু এটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তাই ক্রমিক বা ধারাবাহিক ঔষধ গ্রহণ করতে হবে। রোগীর সমস্যার মধ্যে যেটি পাতলা পায়খানা ধরনের, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা এগুলো থাকে। এগুলোর ঔষধ গ্রহণ করলে রোগী অনেকটা আরাম বোধ করেন। কেউ কেউ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। সুস্থ হওয়ার পর নিয়ম না মানলে আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তখন আবার নিয়ম মানতে হয়।

আর যদি কোনো মানসিক সমস্যা থাকে, তাহলে মানসিক অশান্তি দূর করার জন্য কিছু ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তাতেও রোগী যথেষ্ট উপকৃত হবেন।এ রোগে সাধারণত শারীরিক জটিলতার আশঙ্কা কম। তবে রোগীর পেশাগত বা সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই প্রতিরোধ এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যার যেই ধরনের খাবার হজম করতে অসুবিধা হয়, সেই খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। কারো কারো ক্ষেত্রে ইসবগুল খুব উপকারী। নিজে যে জিনিসটি খেয়ে আরাম বোধ করবেন সেটি খাবেন। বেশি বেশি দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা থাকলে তা কমিয়ে আনতে হবে। আইবিএস কী? ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম সংক্ষেপে আইবিএস (IBS) হচ্ছে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতার ত্রুটিজনিত সমস্যা।

বিভিন্ন গবেষণায় এর কারণ হিসেবে নানা থিওরি বা ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেই একে বলা হয় ফাংশনাল গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল ডিজঅর্ডার(Functional Gastrointestinal Disorder)। অন্য নামে একে বলা হয় স্পাসটিক কোলন (Spastic Colon).. সর্বশেষ ÔRome III Diagnostic Criteria’ অনুসারে আইবিএসকে বর্ণনা করা হয় এভাবে-বারবার পেট ব্যাথা বা অস্বস্তি যদি মাসে কমপক্ষে তিন দিন সর্বশেষ তিন মাসে দেখা যায় এবং সেই সাথে আরো দুই বা ততোধিক লক্ষণ থাকে, যেমন- মলত্যাগের পর অবস্থার উন্নতি হওয়া, মলত্যাগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া বা মলের ঘনত্ব ও অবস্থার পরিবর্তন হওয়া- তাহলে প্রাথমিকভাবে ধরে নেওয়া যায় যে আপনি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমে ভুগছেন।

রোগের লক্ষণ : পেট ব্যাথা বা অস্বস্তি যা মলত্যাগের ফলে কমে যায়। মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন, এছাড়া পাতলা পায়খানা বা পায়খানা শক্ত হয়ে যাওয়া। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুটি একসাথেও থাকতে পারে। পেট ভরা ভরা লাগা। পায়খানার বেগ বা চাপ বেড়ে যাওয়া। পায়খানার সাথে শ্লেষ্মা জাতীয় পদার্থ বের হওয়া। মলত্যাগের পরেও মনে হয় সম্পূর্ণ হলো না ।

রোগের কারণ : যদিও মূল কারণ জানা যায়নি তবুও এর কারণ হিসেবে নানাবিধ থিওরি বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। যেমন-

১. মস্তিষ্ক-অন্ত্র চক্র বা অক্ষে জটিলতা: মস্তিষ্ক অন্ত্রের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, আবার অন্ত্র মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। এভাবে মস্তিষ্ক ও অন্ত্রের মধ্যে যে চক্র বা অক্ষ গড়ে ওঠে, সেই চক্রে বা অক্ষে ত্রুটির জন্য এটি হতে পারে।

২. হাইপোথেলামাস-পিটিউটারি অক্ষে জটিলতা: Stress বা চাপ আইবিএস এর সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এর কারণ হিসেবে দেখা যায় Stress বা চাপ হাইপোথেলামাস-পিটিউটারি অংশের এবং সিমপেথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।

৩. অন্ত্রের সক্রিয়তার পরিবর্তন: অন্ত্রের সক্রিয়তার পরিবর্তনও এ রোগের অন্যতম একটি কারণ। যেমন- অন্ত্রের অধিক সংযোজনশীলতা, অন্ত্রের প্রদাহ, শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত কার্যকারিতা, ক্ষুদ্রান্তে ব্যাকটেরিয়ার অতিরিক্ত বৃদ্ধি, আইলিয়াম (Ilium) এ সেরটনিন (Serotonin) পরিবহনকারীর (transporter) অতিরিক্ত বৃদ্ধি, অতিরিক্ত সাইটোকাইন (Cytokine)।

৪. বংশগত: যেমন-২৮৬ জিন ডায়রিয়া প্রধান আইবিএসএ দেখা যায়।

বর্তমান ধারণা

১. অন্ত্রের স্বাভাবিকভাবে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ার (Bactorial florae) মধ্যে সমস্যা, যেমন Backterioidetes ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হ্রাস।

২. মস্তিষ্কের গ্রে মেটারের মধ্যে পরিবর্তন বিশেষ করে নারীদের। কখন শুরু হয়? : সুনির্দিষ্ট কারণ না থাকলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়-

১. জীবাণু সংক্রমণের পর: ১০ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অন্ত্রের জীবাণু সংক্রমণের পর আইবিএস শুরু হতে পারে। কোনো কোনো প্রোটোজোয়া যেমন- Blastocystis hominis, Dientamoeba Fragilis এর সংক্রমণের পর আইবিএস শুরু হতে পারে।

২. দীর্ঘদিন জ্বরে ভোগার পর।

৩. দুঃশ্চিন্তা বা বিষন্নতায় ভোগার ফলে।

৪. এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে এ রোগ দেখা দিতে পারে।এ রোগে আক্রান্তদের খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। সেদিক থেকে যেসব খাবারে এ সমস্যা বাড়ে এসব খাবার পরিহার করতে হবে। যেমন- দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার, কিছু কিছু শাক, ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার, কৃত্রিমভাবে তৈরি চিনি, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার, মদ জাতীয় পানীয়। এ ছাড়া খাদ্যের একটি ডায়েরি বা নিয়ম মেনে চললে উপকার পাওয়া যেতে পারে। যেমন- অল্প অল্প করে বার বার খাওয়া, গ্লুটিনমুক্ত, আইবিএসের জন্য উপযুক্ত খাবার খাওয়া।

প্রিয় পাঠক,আমরা প্রতিটা রোগ সম্পর্কে আপনাকে তথ্য দেই, সচেতন করি। আমরা এই লেখায় আপনাকে চিকিৎসা প্রদান করি না। কারণ চিকিৎসার বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার রোগের অবস্থা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আপনার চিকিৎসক। তাই এই লেখার মাধ্যমে আপনি আপনার রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে, সচেতন হয়ে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার
একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

মুঠোফোন : 01762-240650

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়

শেয়ার করুন: