শুসুনিশাক এর দশটি ভেষজ উপকারিতা

এই শাকটি গ্রামাঞ্চলে পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই এর গুণাগুণ সম্পর্কে জানেন না, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগে এটি অত্যন্ত উপকারি। কবির ভাষায় …

“ঋতুর পরে ঋতু ফিরে আসে বসুন্ধরার কোলে
চিহ্ন পড়ে বনের ঘাসে ঘাসে, ফুলের পরে ফুলে।”

বৈজ্ঞানিক নাম – Marsilea quadrifoliata L.
উদ্ভিদ পরিবার – Marsileaceae.
ব্যবহার – মূলত: পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলা নাম – শুষনি/শুনশুনি/আবুল ঘাস/ শুশুনি/শুনশুনিয়া শাক।

বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় এই কুড়িয়ে পাওয়া শাকটি শুষনি শাক নামেই বেশী পরিচিত। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে স্থানীয় বাঙালিরা এই শাকটিকে আবুল ঘাস বলেন। স্থানীয় আদিবাসীরা শুষনি শাক, বসাক আদিবাসীরা শুনশুনি শাক বলেন।

মৌলভীবাজার জেলার চা বাগানের সাঁওতালদের ভেতর এই শাক শুনশুনিয়া আরাক নামে পরিচিত। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকায় এ শাক শুশুনি শাক নামে পরিচিত।

কোথায় পাওয়া যায় : বাংলাদেশের বিভিন্ন সমতল এলাকার গ্রামে পাওয়া যায়। নিচু জমিতে, জলাভূমির কিনারে, ভেজা ও স্যাঁতস্যাতে জায়গায় বেশী জন্মে। যেখানে জন্মে সেখানেই বিস্তৃতি দেখা যায়।

দেখতে কেমন : শাকটি আকারে মাটি থেকে প্রায় দুই ইঞ্চি প্রস্হ হয়। শাকটির আগাতে (কান্ডের মাথায়) চারটি পাতা থাকে যা আকারে গোলাকৃতি, তবে প্রত্যেকটি পাতা পরস্পর বিচ্ছন্ন ও পাতার মাঝে খাজ কাটা থাকে। পাতার রং সবুজ । শাকটি খুবই নরম। স্থানীয় মানুষের মতে এই শাক একটু মিষ্টি স্বাদের| এটি Marsileaceae পরিবারের একটি অপুষ্পক ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদ। বছরে গাছে কালচে রঙের স্পোর জন্মায়।

স্পোরের মাধ্যমে এবং গাছের মাধ্যমেই চারা গজায় এবং বংশবৃদ্ধি ঘটে। প্রাকৃতিক পরিবেশে এমনিতেই জন্মানো এই শাক চাষ করার কোনো ইতিহাস জানা যায় না।

কখন পাওয়া যায় : সাধারণত বাংলা অগ্রহায়ন মাসে এই শাক পতিত জমিতে প্রচুর পরিমাণে জন্মে। এছাড়া বর্ষার পরবর্তী সময়ে বাড়ীর আশে পাশের স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে এই শাক পাওয়া যায়। ইরি মৌসুম শুরুর সাথে সাথে এই শাক জমিতে আর দেখতে পাওয়া যায় না। তবে বাড়ীর আশ পাশের জমিতে সামান্য পরিমাণে দেখা যায়।

কিভাবে খাওয়া যায় :
শাক তোলার পর তাজা শাক ভাল করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এই শাক অন্যান্য শাকের মত তেল, মরিচ, পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয়। এলাকাভেদে রান্নায় হলুদ-মরিচ বা অন্য মশলা স্বাদমতো মেশানো যেতে পারে।

অনেক পরিবার বছরের বিশেষ একটি সময়ে নিরামিষ খায় এবং সেই সময় তারা এই শাক বেশি খেয়ে থাকে। এই শাক বেশী পরিমানে একটি এলাকা থেকে আহরন করা যায় না বলে অন্য শাকের সাথে মিশিয়েও খাওয়া হয়। গ্রামীণ পর্যায়ে এই শাক মূলত নারী ও শিশুরাই সংগ্রহ করে থাকে। গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য এই শাক যেমন পরিবারের খাদ্য চাহিদা মেটায় একইভাবে তা পুষ্টি চাহিদাও দূর করে।

উচ্চরক্তচাপ (high blood pressure) হলে কি করবেন?
উচ্চরক্তচাপ হলে শুশনি শাক চিনির মিছরি দিয়ে বেঁটে খেলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে। শুষনি শাক হাইপারটেনশন ও ঘুমজনিত সমস্যার মহৌষধ হিসেবে শুসনি শাক ব্যবহার করেন ময়মনসিংহের গারো ও কোচ উপজাতিরা। পাতার রস ব্যবহার করেন কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের ওষুধ হিসেবে।

সতর্কতা – এই শাক খেলে স্বাভাবিক সময়ের চাইতে একটু বেশি ঘুম হয়ে থাকে।

• শাক নরম বিধায় সাবধানে তুলতে হয়।
• গাছে স্পোর তৈরী হলে এই শাক খেতে তেমন একটা ভাল লাগে না।
• অনেকের ক্ষেত্রে স্পোরগুলি এলার্জি তৈরী করতে পারে।
• এই শাকের মতই প্রায় দেখতে আমরুল নামের একটি শাকের সাথে অনেকেই একে মিলিয়ে ফেলেন, আমরুল শাক হৃদয় আকৃতির তিন পাতা। শুষুনি চার পাতা। স্বাদেও ভিন্নতা আছে।

• শাক তোলার পর বেশী সময় রাখা যায় না, তাজা থাকতে থাকতে রান্না করে ফেলতে হয়।
• যেসব জমিতে রাসায়নিক সার এবং রাসায়নিক কীটনাশক দেয়া হয় সেসব জমির শাক না খাওয়াই ভাল।
• শাক তোলার ক্ষেত্রে অবশ্যই এর বংশ যাতে একবারেই শেষ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মিষ্টি আলু শাক, মেস্তা শাক, বতুয়া শাক, ডাটা শাক, নুনিয়া শাক ও শুশনি শাকের মিশ্র ভাজি। আয়রনের পরিমান ভাল থাকে। সেক্ষেত্রে লেবুর রস কয়েক ফোটা নেওয়া যেতে পারে গরম ভাতে।

ওষুধি ব্যবহার:

◙ পুরনো জ্বরে পথ্য হিশেবে, মেহ ও কুষ্ঠরোগে এই শাক ব্যবহার করা হয়।

◙ শুষনী শাকের রস পরিমিত মাত্রায় গরম করে পান করলে শ্বাসকষ্ট দূর হয় এবং ভালো ঘুম হয়।

◙ শৈশবকাল থেকে যাদের মেধা কম, তাদের মেধা বৃদ্ধির পক্ষে তিন চার মাস যাবৎ শাক নিয়মিতভাবে খাওয়ালে উপকার হয়।

◙ কাঁচা শাক বেটে পানি ও চিনি মিশিয়ে নিয়মিত খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

◙ শরীর জ্বালা করলে এই শাকের রস অথবা শাক বাটা সারা গায়ে মেখে তারপর গোসল করলে জ্বালা দূর হয়।

উপকারিতা :

শুষনি শাক খেলে ঘুম পায়। তাই নিদ্রাহীনতায় যারা ভোগেন তাদের নিয়মিত শুষনি শাক খেলে দ্রুত কাজ হয়। এ ছাড়া নিয়মিত শুষনি শাক খেলে মাথার যন্ত্রণা, তীব্র মানসিক চাপ, অনিন্দ্রা, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, গায়ে ব্যথা, পায়ের পেশির অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন, বাত, জিভে ও মুখে ক্ষত, চর্মরোগ ইত্যদি দূর হয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

শুষনি শাকের কাশি ও কফ নিরাময়কারী ভূমিকা বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা যায়। চোখের রোগ, ডায়াবেটিস ও ডায়ারিয়া নিরাময়ে শুষনি পাতার রস কার্যকর। সন্তান প্রসবের পর মায়েরা শুষনি শাক খেলে দুগ্ধক্ষরণ বাড়ে। সাপের কামড়ে শুষনি পাতার রস দিয়ে চিকিৎসা করার প্রচলিত রীতি রয়েছে।

ইউনানী মতে, উষ্ণতা ও জ্বরনাশক এবং রুচিবর্ধক ও হজমকারক। বলকারক, রসায়ন, সংকোচক এবং ব্যথা উপশমক ও যকৃতের উষ্ণতা নাশক। অনিদ্রা ও উচ্চ রক্তচাপের উপকারী। প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও রক্তপিত্তে ব্যবহার হয়। জ্বালা এবং হাঁপানী ও কীটের দংশনে উপকারী। এছাড়ও ডায়াবেটিস, চর্মরোগ ও ডায়ারিয়ায় উপকারী।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার
একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

মুঠোফোন : (চিকিৎসক) 01742-057854

(সকাল দশটা থেকে বিকেল ৫টা)

ইমো/হোয়াটস অ্যাপ : (চিকিৎসক) 01762-240650

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : মেহ-প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের প্রতিকার

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

শেয়ার করুন: