মন ভেঙে গেলে শরীরে যা ঘটে

হৃদয় তারাই ভাঙে, যারা হৃদয়ের সবচেয়ে কাছে থাকে। কারণ দূর থেকে কোনোকিছু ভাঙা সহজ নয়। তাই আপনজনের দেওয়া ব্যথা অন্তরে বড় বিষাদের সুরে বাজতে থাকে। ভালোবাসার মানুষটি কিংবা আপন কেউ যখন কারও মন ভেঙে দেয়, সেখানেই শেষ নয়। যার মন ভেঙেছে, শারীরিকভাবেও সে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, মন ভেঙে গেলে শরীরে কী ঘটে-

ব্যথা

যখন কেউ আমাদের হৃদয় ভেঙে দেয়, তখন আমরা আমাদের বুকে এবং শরীরে সত্যিকারভাবেই ব্যথা অনুভব করি। অন্যরা হয়তো পুরো বিষয়টিকে নাটক মনে করতে পারেন। কিন্তু সত্যিটা হলো আমাদের এই অনুভূত ব্যথা কোনো নাটকের অংশ নয়। এই ব্যথা অনুভূত হয় কারণ আমাদের মস্তিষ্ক তীব্র মানসিক ব্যথা গ্রহণ করে এবং একে শারীরিক ব্যথা হিসেবে প্রতিক্রিয়া দেয়। তাই কাউকে ড্রামা কুইন আখ্যা দেওয়ার আগে তাকে বোঝার চেষ্টা করুন। তার ব্যথা দেখা না গেলেও অনুভব করতে চেষ্টা করুন।

চাপ

যখন কেউ হৃদয় ভেঙে দেয় সেই সময়ের জন্য মানসিক চাপ খুব স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। আপনার ভেতরে অত্যন্ত চাপ ও উদ্বেগ তৈরি হয় যা আপনাকে স্ট্রেসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এমনটা ঘটলে আপনাকে অবশ্যই নিজের যত্ন নিতে হবে। মানসিক চাপ বাড়তে দেবেন না। ভয়, উদ্বেগ ও অসহায়ত্বের অনুভূতিগুলো দূর করুন। এমন সব কাজ করুন, যেগুলো আপনার মানসিক চাপ কমায়। বিভিন্ন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।

হার্ট ধীর হয়ে যায়

আপনি কি জানেন যে, যখন কারও হৃদয় ভাঙে তখন তারা বুকে যে ব্যথা অনুভব করে, তা আসলে হার্ট ধীর হয়ে যাওয়ার ফলে? গবেষণা উঠে এসেছে, মন ভেঙে গেলে হার্ট ধীর হয়ে যেতে পারে! কারণ আপনার শরীর তখন মানসিক অশান্তির মধ্য দিয়ে যায় তাই হৃদয় ধীর হয়ে যায় এবং পেশী দুর্বল হয়। এমনকী কারও কারও ক্ষেত্রে হার্টব্রেক থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট পর্যন্ত হতে পারে। তাই এ সংক্রান্ত কারণে বুকে হঠাৎ ব্যথা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পিরিয়ডে বিলম্ব হতে পারে

মানসিক চাপ আপনাকে নানাভাবে ধ্বংস করতে পারে। শুধু মানসিকভাবে নয়, শারীরিকভাবেও এটি কষ্ট দেয়। কোনো নারীর ক্ষেত্রে মন ভাঙার ঘটনা ঘটলে তার পিরিয়ডে বিলম্বও হতে পারে। হৃদয় ভেঙে গেলে আমাদের আবেগগুলো দোদুল্যমান হয় এবং আমাদের শরীর তা গ্রহণ করে। ফলে তা আমাদের বায়োলজিক্যাল ক্লকের সঙ্গে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। তাই মন খারাপ দূর করার ছোট ছোট উপায় খুঁজুন। হাঁটতে যান বা গরম পানীয় পান করুন। চকোলেট খান, মুভি দেখুন। নয়তো কয়েকদিনের জন্য দূরে কোথায় ঘুরতে চলে যান।

চুল পড়া

আপনি হয়তো সিনেমা কিংবা বিজ্ঞাপনে দেখে থাকবেন যে মানসিক চাপে থাকা মানুষের অনেক চুল পড়ে। এটি আসলেই সত্যি। এটি শরীর চাপযুক্ত পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া করার কারণে ঘটে। যে মুহুর্তে আপনি চাপের মধ্যে থাকেন, বিশেষ করে মন ভেঙে যাওয়ার পর। তাই সেই মানসিক চাপ দূর করা ও নিজের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলো খুঁজে বের করুন। নয়তো সবচেয়ে দামী শ্যাম্পু বা সিরাম ব্যবহার করেও কোনো উপকার পাবেন না।

অসুস্থ হয়ে পড়া

যখন খুব কাছের কেউ হৃদয়টা ভেঙে দেয় তখন সেই ধাক্কা কেবল আবেগকে নাড়া দেয় না বরং হার্ট ধীরে করে দেয়, খাদ্যাভ্যাসও পরিবর্তন করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানুষ খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় আপনাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে। ভিটামিন সি যুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। নিজেকে অসুস্থ হতে দেওয়া যাবে না।

কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত ব্যক্তিই এর কষ্ট সম্পর্কে জানেন। প্রথমে গুরুত্ব না দিলে এটি পরবর্তীতে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ দায়ী হতে পারে।

খাবারে অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ফাইবারযুক্ত খাবার কম খাওয়া ইত্যাদি কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আবার অনেক সময় কিছু ওষুধের কারণেও হতে পারে এই সমস্যা। সময়মতো এর চিকিৎসা না করালে দেখা দিতে পারে পাইলস।

তাই সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে নিন এমন ৫ পানীয় সম্পর্কে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কাজ করে-

শসার জুস

শসা একটি উপকারী সবজি। এর জুস কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় বেশ কার্যকরী। শসায় থাকে পর্যাপ্ত সরবিটাল। এই উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে কাজ করে। এছাড়া শসার জুসে থাকে ফাইবার। তবে এক্ষেত্রে জুস তৈরি করতে হবে শসার খোসাসহ। এতে বেশি উপকার পাবেন।

আপেলের জুস

আপেলের জুস খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর। এই পানীয় নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে। আপেলে থাকে প্রচুর ফাইবার। সেইসঙ্গে ভিটামিন ও মিনারেলে ভরা থাকে এটি। আপেলের জুস খেলে শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য নয়, সেইসঙ্গে মুক্তি মিলবে আরও অনেক রোগ থেকে। নিয়মিত পুষ্টির জোগান হিসেবে এটি রাখতে পারেন খাবারের তালিকায়। তবে জুস তৈরির আগে অবশ্যই আপেলের বীজ ফেলে দেবেন।

পাম

কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে কাজ করে পাম। পামে আছে ডায়েটরি ফাইবার। এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে কাজ করে। এই সমস্যা দূর করতে চাইলে পামের বীজ ফেলে জুস তৈরি করে খেতে হবে। এই জুস নিয়মিত খেলে সমস্যা দ্রুতই কমে আসবে।

অরেঞ্জ জুস

উপকারী আরেকটি পানীয় হলো অরেঞ্জ জুস। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে দারুণ কাজ করে ভিটামিন সি। অরেঞ্জ জুসে থাকা ফাইবারও কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায়। তাই এই সমস্যা থাকলে নিয়মিত অরেঞ্জ জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে সুস্থ থাকা সহজ হবে।

পালং শাকের জুস

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দারুণ কার্যকরী হলো পালংশাকের জুস। শরীরের সুস্থতায় কাজ করে এটি। এই শাকে আছে পর্যাপ্ত আয়রন। সেইসঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত ফাইবার। পালং শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে দ্রুতই। তাহলে এবার থেকে নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখুন উপকারী এই শাক।

শেয়ার করুন: