বন্ধ্যাত্ব বা সন্তান না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

সন্তান স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার এক মজবুত সেতুবন্ধন, দাম্পত্য সম্পর্ক তাতে পুর্ণতা পায়। কিন্তু বন্ধ্যাত্বকে বলা হয় দাম্পত্য জীবনের অভিশাপের মতোন। কারণ কোন দম্পতির না শখ হয় একটি শিশু সন্তানের হাসি দেখার। তবু আমাদের চারপাশে অনেকেই বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভোগেন।

বন্ধ্যাত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ত্রুটির জন্য গর্ভধারণ হয় না।

বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনুর্বরতার কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।যদিও আমাদের দেশে এখনো গর্ভধারণ না করার জন্য প্রথমেই মেয়েদের দায়ি করা হয়।

সন্তান লাভের আশায় কোনো দম্পতি কোনো ধরনের জন্মনিরোধক উপায় অবলম্বন না করে এক বছর পরও যখন স্ত্রীর গর্ভধারণ হয় না তখন তাকে বলা হয় বন্ধ্যত্ব বা ইনফার্টিলিটি।

গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পেতে যোগাযোগ করুন। নির্ধারিত মাত্রায় ঔষধ সেবন করলে এ কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ইনশাল্লাহ।

তবে আজকের চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক ধাপ এগিয়ে আছে। টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি সম্পর্কে আজকাল কমবেশি সবার জানা।শরীরের ভেতরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ইন ভিভো ফার্টিলাইজেশন, আর কৃত্তিম উপায়ে শরীরের বাইরে, পরীক্ষাগারে উপযুক্ত পরিবেশে এই নিষেক বা মিলন সফল হলেই তার নাম হলো ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন সাধারণ মানুষের কাছে, যা টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নামে পরিচিত।

তবে বন্ধ্যাত্ব মানেই টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নয়। যে কোনো নিঃসন্তান দম্পতির ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের কারণ শুধু স্বামী বা স্ত্রী প্রজনন অঙ্গের নানা ত্রুটি বা অসুখ নয়, আরো নানা বিষয় আছে যার কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। বয়স ৩৫-এর বেশি হলে, অস্বাভাবিক মোটা শরীর হলে, মানসিক কারণে শারীরিক মিলনে লজ্জা বা ভয়ও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।

বৈবাহিক জীবনে অশান্তি বা দ্বন্দ্বের জন্য শারীরিক সম্পর্ক অনিয়মিত বা সময়মত না হলে গর্ভসঞ্চার নাও হতে পারে ।অনেক সময় স্বামীর কিছু রোগের (সিফিলিস, গনোরিয়া) কারণেও স্ত্রীর সন্তান ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সেই সঙ্গে স্ত্রীর সেইরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

থাইরয়েড গ্রন্হির অসুখ অনুর্বরতার কারণ হতে পারে। মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে দায়ি ফ্যালোপিয়ন টিউবে বাধা, পলিসিষ্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, ডায়াবেটিস ইত্যাদি।

পুরুষের বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ সিমেনে উপযুক্ত পরিমাণে গতিশীল স্পার্মের অভাব। এছাড়াও পরিবেশ দুষণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত গরমে কাজ করা, স্মাম্পস, টাইফয়েড, আর্থাইটিস, হাইড্রোসিল ইত্যাদি অসুখে শুক্রাণুর উৎপাদন কমে গিয়ে দেখা দেয় বন্ধ্যাত্ব। সেই সঙ্গে অতিরিক্তি ধুমপানও বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে।

ঋতুকাল (পিরিয়ড), ডিম্ব নিঃস্বরন (ওভুলেশন) এবং নারীর গর্ভধারণ সম্পর্কিত কিছু কথা।
জীবনের প্রতিটি দিনই পুরুষ শুক্রানু উৎপন্ন করতে পারে। পক্ষান্তরে নারী প্রায় ১০ থেকে ২০ লক্ষ ডিম্বানু নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং তার অল্প কিছু মাত্র জীবনকালে অবমুক্ত করে।

আবহাওয়ার পার্থক্যভেদে নারীর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সে প্রথম পিরিয়ড শুরু হয়। পিরিয়ড শুরু হবার সময়কালে মাত্র ৩ লক্ষ ডিম্ব সক্রিয় থাকে, তার পুর্বেই বেশিরভাগ ডিম্বানু নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রতি মাসিক ঋতুকালে মাত্র একটি ডিম্ব পরিপক্ক হয়ে ডিম্ব থলি থেকে নিঃসৃত হয়।

নিঃসৃত ডিম্বানু ফেলোপাইন টিউব (প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ) এর শেষ প্রান্তে এসে অবস্থান নেয়। পরবতীতে তা ক্রমশঃ গর্ভাশয়ের এর দিকে অগ্রসর হয়। তার এই যাত্রাপথে যদি কোন শুক্রানু দ্বারা ডিম্বটি নিষিক্ত হয় তবে তা গর্ভাশয়ে গিয়ে বসে যাবে। যাকে আমরা নারীর গর্ভধারণ বলি। গর্ভাশয়ে পরবর্তীতে শিশুর জীবনকাল আরম্ভ হয়।

আর যদি ডিম্বানুটি কোন পুরুষের শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত না হয়, তবে তা বিচূর্ন হয়ে কিছু রক্তকনিকা সহ মাসিক ঋতুচক্রের সময় নির্গত হয়ে যাবে

ডিম্ব নিঃসরণ কীভাবে সনাক্ত করবেন?

গড়পড়তা প্রতি ঋতুচক্র ২৮ থেকে ২৯ দিন ব্যাপ্ত থাকে। যা পুর্ববতী ঋতুচক্রের প্রথম দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী ঋতুচক্র শুরুর আগের দিন পর্যন্ত গণনা করা হয়। বেশিরভাগ নারীর মাসিক ঋতুচক্রের ১১তম থেকে ২১তম দিবসের মাঝের সময়ে ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্ব নিঃসৃত হয়। ডাক্তারী ভাষায় এই সময়কে নিষেক-কাল বলা হয়। কারণ এই সময়ের মধ্যে যৌন মিলনের ফলে নারীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে। যারা কোন প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা ইনজেকশান ব্যবহার না করতে চান তারা এই সময়কালে মিলনে বিরতি দিয়ে গর্ভধারণ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। একই ভাবে যেসকল যুগল সন্তান নিতে চান তারা এই সময়কালে বেশি বেশি মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভাবনা প্রকট থাকে। তবে মনে রাখবেন প্রতি মাসে একই সময়কালে ডিম্ব নিঃসরণ নাও হতে পারে। National Institute of Environmental Health Sciences এক রিচার্স এ দেখা গেছে মাত্র শতকরা ৩০ ভাগ নারীর ঋতুচক্রের ১০ থেকে ১৭ তম দিবসের মাঝে ডিম্ব নিঃস্বরীত হয়েছে। তাই যারা এ সময় মিলনে বিরতি দিয়ে জন্মনিয়ন্ত্রন করতে চান তারা বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। আপনি এই ঠিকানায় গিয়ে ফার্টিলিটি ট্রেকিং করতে পারেন।

ডিম্বানুর নিষেক সম্পর্কে কিছু তথ্য:

* ডিম্বাশয় থেকে নিঃস্বরনের পর প্রতিটি ডিম্বানু ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা জীবিত থাকে।

* প্রতিবার সাধরণত একটি ডিম্ব নিঃস্বরীত হয়।

* ডিম্বানুর নিঃস্বরন মানসিক চিন্তা, অসুস্থতা অথবা ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

* অনেক নারীর ডিম্ব নিঃস্বরেনের সময় যৎসামান্য রক্ত নির্গত হতে পারে।

* নিঃস্বরনের পর নিষিক্ত ডিম্বানু ৬ থেকে ১২ দিনের মধ্যে গর্ভশয়ে স্থান নেয়।

* ঋতুচক্রের রক্তক্ষরন ডিম্বানু নিঃস্বরন ব্যতিরিকেও হতে পারে।

* ঋতুচক্রের রক্তক্ষরন ব্যতিরিকেও ডিম্বানু নিঃস্বরীত হতে পারে।

মাসিক ঋতুচক্রের বিভিন্ন দিক:

ঋতুচক্র হচ্ছে নারীর একটি ডিম্বানু নিষেক অথবা ক্ষরনের শারীরবিত্তিয় পরিবর্তনের চক্র। গড়পড়তা প্রতি ঋতুচক্র ২৮ থেকে ২৯ দিন ব্যাপ্ত থাকে। যা পুর্ববতী ঋতুচক্রের প্রথম দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী ঋতুচক্র শুরুর আগের দিন পর্যন্ত গনানা করা হয়। তবে অনেক নারীর ঋতুচক্র মাত্র ২২ দিন (সর্বনিন্ম) এবং অনেকের ৩৬ দিন (সর্বচ্চ) পযন্ত ঋতুচক্র স্থায়ী হতে পারে। এমনকি একই নারীর ভিন্ন ভিন্ন মাসে ভিন্ন সময় ব্যাপ্তির ঋতুচক্র হতে পারে।

ঋতুচক্রের ভিতর সাদা স্রাব (ভাজাইনাল ডিসচার্য) একটি স্বাভাবিক বিষয়। এই ক্ষরনের মাত্রা ইস্ট্রোজেন এবং প্রো-ইস্ট্রোজেন হরমনের লেভেল উঠা-নামার সাথে কম বেশি হতে পারে।

নারীর বয়স যত বাড়তে থাকে তত ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য (সময় ব্যাবধান) কমতে থাকে। আমাদের দেশে সাধারনত নারীদের ৫৫ থেকে ৫৬ বছর বয়সে ঋতুচক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় অনেক নারী বসতে অথবা উঠতে মুত্র ধরে রাখতে পারেন না এবং ক্ষানিক মুত্র বিসর্জন করে ফেলেন। এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। অনেকে এটি না জানার কারনে চিন্তিত হয়ে ডাক্তারের সরনাপন্ন হন – যার আধৌ প্রয়োজন নেই।

ইনফার্টিলিটি সমস্যা ও প্রতিকার
সন্তান লাভের আশায় কোনো দম্পতি কোনো প্রকার গর্ভনিরোধক উপায় অবলম্বন না করে এক বছর স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন যাপনের পরও যখন স্ত্রীর গর্ভসঞ্চার না হয় তখন তাকে বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। সন্তান স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যকার এক মজবুত সেতুবন্ধন, দাম্পত্য জীবন তাতে পূর্ণতা পায়। দেখা গেছে যে ৬ মাস একাধারে সহবাসের পর শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে এবং এক বছর পর শতকরা ৯০ ভাগ মহিলা গর্ভধারণ করে থাকে। স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার এক বছরের মধ্যে সন্তান সম্ভাবনা না ঘটলে ত্রুটি স্বামী বা স্ত্রী অথবা উভয়েরই থাকতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের সমগ্র জনসংখ্যার ৮-১০ ভাগ দম্পতি কোনো না কোনো রকমের বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশে এর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয় এই সংখ্যা একই রকম হবে।

বন্ধ্যাত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয়েরই ত্রুটির জন্য গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

পুরুষের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারণ
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ বীর্যে উপযুক্ত পরিমাণে গতিশীল শুক্রাণুর (সপার্ম) অভাব। পুরুষের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারণকে তিনটি মূল ভাগে ভাগ করা যায়।
• শুক্রাণুর উৎপাদন সমস্যা, যা হতে পারে গুণগত বা সংখ্যাগত
• উৎপাদিত মানসম্পন্ন শুক্রাণু নিঃসরণে অক্ষমতা
• ইমিউনোলজিক্যাল সমস্যা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটি যেমন-শুক্রাশয় শুক্রথলিতে না থাকলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

পুরুষের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের আর একটি অন্যতম কারণ হলো ইনফেকশন। মাসপস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, গনোরিয়া, যক্ষ্মা ইত্যাদি পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত গরম পরিবেশে কাজ করা, গরম পানিতে গোসল করা অথবা নাইলনের তৈরি অন্তর্বাসের ব্যবহার শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, কারণ শুক্রাণু তৈরির উপযুক্ত তাপমাত্রা এতে বজায় থাকে না। অতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, মাদকদ্রব্য যেমন-কোকেইন সেবন, কোনো কোনো ব্লাড প্রেসারের ওষুধ যেমন নিফিডিপিন শুক্রাণুর ডিম্বাণু নিষিক্তকরণ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয় এবং বন্ধ্যাত্বের কারণ হিসেবে দেখা দেয়।
এছাড়া পুরুষের ক্ষেত্রে হরমোনজনিত সমস্যা এবং জেনেটিক সমস্যাও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।

মহিলাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারণ
ডিম্বাশয়ের ডিম্বাণু তৈরির জটিলতা মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। দেখা গেছে, ২০-২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্যা মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী। এছাড়া থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ, পলিসিস্টিক ওভারি বা ওভারির সিস্ট, ডায়াবেটিস ইত্যাদি বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে ? মেয়েদের প্রজননতন্ত্রের জন্মগত ও গঠনগত ত্রুটি, ফ্যালোপিয়ন টিউবে বাধা, এন্ড্রোমেট্রিওসিস, অধিক পরিমাণে প্রলেকটিন হরমোন তৈরি, জরায়ুর ইনফেকশন, জরায়ুর টিউমার অনুর্বরতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত।

শুধু স্বামী বা স্ত্রীর প্রজনন অঙ্গের নানা ত্রুটি বা অসুখ নয়, আরো নানা বিষয় আছে যার কারণে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। যেমন বয়স, যা পুরুষের চেয়ে মেয়েদের ক্ষেত্রে অধিক প্রযোজ্য। মেয়েদের বেলায় ২৫-৩০ বছর বয়স সন্তান জন্মদানের উপযুক্ত সময়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের সমস্যাগুলো জটিল হয়। যত বয়স বাড়তে থাকে ডিম্বাণুর সংখ্যা তত কমতে থাকে। এই ডিম্বাণু হ্রাসের প্রক্রিয়া শুরু হয় ত্রিশ বছর বয়স থেকে এবং ডিম্বাণু হ্রাসের প্রক্রিয়া দ্রুত হয় চল্লিশের কাছাকাছি বয়সে। বয়সের সঙ্গে ডিম্বাণুর কোয়ালিটি নষ্ট হতে থাকে, সেই সঙ্গে দেখা দেয় জেনেটিক নানা ত্রুটি। কাজেই বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়স ৩৫-এর কাছাকাছি হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা উচিত।

বয়স ছাড়াও স্বামী বা স্ত্রীর শরীর অস্বাভাবিক মোটা হলে মানসিক কারণে শারীরিক মিলনে লজ্জা বা ভয় বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। বৈবাহিক জীবনে অশান্তি বা দ্বন্দ্বের জন্য শারীরিক সম্পর্ক অনিয়মিত বা সময়মতো না হলে গর্ভসঞ্চার নাও হতে পারে।

বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা
পুরুষের ক্ষেত্রে সিমেন (বীর্য) পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। সিমেন পরীক্ষার রিপোর্ট যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে স্বামীর উল্লেখযোগ্য কোনো সমস্যা নেই বলা যেতে পারে। মূলত সিমেনে উপযুক্ত পরিমাণে গতিশীল সপার্মের অভাবই পুরুষের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের প্রধান কারণ। যদি সিমেন পরীক্ষায় ইনফেকশনের লক্ষণ থাকে তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা দরকার হয়। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল হতে বিরত থাকা, ওজন কমানো, ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ রাখা ইত্যাদি সন্তান উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। সর্বোপরি সুস্থ জীবন-যাপন বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকলে ওটও একটি উপযুক্ত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ডিম্বাণু নিঃসরণের সময়ে জরায়ুর ভেতরে স্বামীর বীর্য বিশেষভাবে প্রসেসিংয়ের পর সূক্ষ্ম ক্যাথেটারের মাধ্যমে দিয়ে দেয়া হয়।

তবে শুক্রাণুর সংখ্যা ৫ মিলিয়নের নিচে বা শুক্রাণুর গঠনগত ত্রুটি থাকলে বা নড়াচড়া কম থাকলে ইকসি (ICSI) দরকার হয়। ইকসি পদ্ধতিতে একটি ডিম্বাণুর মধ্যে একটি সুস্থ শুক্রাণু ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে ডিম্বাণু নিষিক্ত করা হয়। যেসব পুরুষের ক্ষেত্রে বীর্যবাহী নালিতে বাধা থাকে তাদের বেলায় সার্জিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যমে (MESA, TESA, PESA-এর মাধ্যমে) শুক্রাণু সংগ্রহ করে ইকসি করা যায়। পুরুষের বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে ইকসি অত্যন্ত উন্নত ধরনের চিকিৎসা এবং এই চিকিৎসাব্যবস্থা সব সেন্টারে থাকে না।

পুরুষের ক্ষেত্রে যেমন সিমেন পরীক্ষা জরুরি, তেমনি মেয়েদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হরমোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডিম্বাশয়ের জটিলতা তথা প্রতি মাসে ডিম্বাশয় হতে ডিম্বাণু নিঃসরণ হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়।

শারীরিক অক্ষমতার কারণ ও প্রতিকার

পুরুষের শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতা অথবা পুরু/ষত্ব হীনতা আজকাল প্রকট আকার ধারণ করছে। একদম তরুণ থেকে শুরু করে যে কোন বয়সী পুরুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে এমন যৌ/ন সমস্যা।

অনেক পুরুষ অকালেই হারিয়ে ফেলছেন নিজের সক্ষমতা, উঠতি বয়সের যুবকরা রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে দাম্পত্যে অশান্তি, সন্তানহীনতার হার এবং সত্যি বলতে কি বাড়ছে ডিভোর্সও।

কিন্তু কারণ কি পুরুষদের এই ক্রমশ শারীরিকভাবে অক্ষম বা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদের বর্তমানের আধুনিক জীবনযাত্রার মাঝেই।

হ্যাঁ, আপনার প্রতিদিনের স্ট্রেসভরা অস্বাস্থ্যকর জীবন, আপনার নিজের কোনও একটা ভুলই হয়তো আপনাকে ক্রমশ ঠেলে দিচ্ছে পুরুষত্বহীনতার দিকে। অথবা হতে পারে আপনার শরীরে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যৌ/ন হরমোনের পরিমাণ, যা আপনার সংসারকে করছে অশান্তিময়।

কেন এমন হচ্ছে সেটা জানার আগে জানতে হবে পুরুষের একান্ত দুর্বলতাগুলো কী কী বা কেমন হতে পারে। তা জেনে নিলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার সমস্যাটা কোথায়।

শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতার বিষয়টিকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-

১. ইরেকশন ফেইলিউর : পুরুষ লি/ঙ্গের উত্থানে ব্যর্থতা। এতে করে লিং/গের উত্থানে সমস্যা তৈরি, যাতে করে দীর্ঘদিন যাবত লিং/গ গরম হয় না এবং সহ/বাসের উপযোগী হয় না।

২. পেনিট্রেশন ফেইলিউর : লি/ঙ্গের যো/নিদ্বার ছেদনে ব্যর্থতা, বা যো/নিতে প্রবেশের মত পর্যাপ্ত উথিত না হওয়া। এতে করে মাঝে মাঝে লিং/গ উত্থিত বা গরম হয় আবার গরম হয়েও শীতল হয়ে যায়। আবার গরম হলেও স্ত্রী যো/নীতে প্রবেশ করা মাত্রই তা নরম হয় যায়, ফলে সংসারে বাড়ে অশান্তি। বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়তে থাকে।

৩. প্রি-ম্যাচুর ইজাকুলেশন : সহ/বাসে দ্রুত বী/র্য-স্খলন, তথা স্থায়িত্বের অভাব। এতে করে পুরুষের লিং/গ গরম হলেও তা খুব দ্রুতই পতন হয় বা বী/র্য আউট হয়ে যায়। তাতে নারী এবং কেউ পরম সুখলাভ করতে পারে না।

এ সমস্যার জন্য নাইট কিং পাউডার ও সিরাপ বেশ কার্যকরী ঔষধ। এই ঔষধ সেবনে উপরোক্ত সমস্যার সমাধান হবে, ইনশাল্লাহ।

কারণগুলি কি কি হতে পারে ?

প্রাকৃতিক বা শারীরিক কারণগুলোর মাঝে মুখ্য হলো-

১. ডায়াবেটিস,

২. লি/ঙ্গে জন্মগত কোনওপ্রকার ত্রুটি,

৩. সে/ক্স হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,

৪. গনোরিয়া বা সিফিলিসের মত যৌ/নরোগ ইত্যাদি।

তাছাড়াও প্রাকৃতিক শারীরিক সমস্যা ছাড়াও প্রচণ্ড কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি, দূষিত পরিবেশ, ভেজাল খাওয়া দাওয়া, কম বিশ্রাম ও ব্যায়াম ছাড়া অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি অনেক কারণই আছে ক্রমশ যৌ/ন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পেছনে।

আবার অতিরিক্ত যৌ/ন সম্পর্কে যাওয়া, অতিরিক্ত মা/স্টার/বেট বা হ/স্তমৈ/থুন করা, যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাবিজাবি ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণকে অবহেলা করলেও চলবে না।

এছাড়া বয়স জনিত অসুস্থতা, সঙ্গিনীর সাথে বয়সের পার্থক্য বা সঙ্গিনীকে পছন্দ না করা, এইডসভীতি, পর্যাপ্ত যৌ/ন জ্ঞানের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ যৌ/নাসনও অক্ষমতা বা দুর্বলতার জন্য দায়ী হতে পারে।

কী কি করবেন ?
প্রথমেই যা করবেন, সেটা হলো নিম্নোক্ত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। লজ্জা না করে নিজের সমস্ত সমস্যা খুলে বলুন ও ডাক্তারের পরামর্শ মত প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা নিন।

এতে লজ্জার কিছুই নেই। একটাই জীবন। লজ্জার চাইতে নিজেকে সুস্থ ও সক্ষম রাখা জরুরী। তাই দ্বিধাহীন চিত্তে যোগাযোগ করুন। আপনার সমস্যা অনুসারে আপনাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে।

আপনার ডায়াবেটিস থাকলে প্রয়োজনীয় সকল নিয়ম কানুন মেনে চলুন।
নিজের জীবনধারাকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনে বদলে ফেলুন। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান, চেষ্টা করে কাজের চাপের মাঝেও বিশ্রাম নিতে। আপনার শরীর যখন সুস্থ ও সক্ষম থাকবে, যৌনজীবনও থাকবে সুন্দর।

সঙ্গীর সাথে রোমান্টিক জীবনের উন্নতি করুন। এক ঘেয়ে যৌ/ন জীবনে নানান রকমের চমক ও আনন্দ নিয়ে আসুন। তাঁকেও বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন যে নতুন চমক এলে আপনার মানসিকভাবে সাহায্য হবে। রোমান্টিক বেডরুম, আকর্ষণীয় অন্তর্বাস, সে/ক্স টয় ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।

যদি সঙ্গীকে অপছন্দ করার কারণে সমস্যা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন সঙ্গীকে ভালবাসতে। তার সাথে দূরে কোথাও নিরিবিলি বেড়াতে যান, তাঁকে গভীর ভাবে জানার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে তার প্রেমে পড়ার চেষ্টা করুন।

মানসিকভাবে প্রেমে পরলে শরীরটাও সাড়া দেবে। একটা জিনিষ মনে রাখবেন, বাস্তবের নারীর সাথে সিনেমার নায়িকা বা প/র্ণ স্টারদের মিল খুঁজতে যাবেন না। নিজের দিকে তাকান, নিজের সাধারণত্ব দেখুন। দেখবেন, সঙ্গীকেও আর খারাপ লাগছে না।

কী করা উচিত নয় ?
অতিরিক্ত মাস্টারবেট করার অভ্যাস অবিলম্বে ত্যাগ করুন। আর যাদের স্ত্রী আছে তাঁরা স্ত্রীর সাথেই যৌ/নজীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।

বাজারে সাময়িকভাবে যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, যেগুলো সেবনে ২৪ ঘণ্টার জন্য যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ে। এইধরনের ওষুধ মোটেও ব্যবহার করবেন না। এতে সাময়িক ক্ষমতা বাড়লেও, ক্রমশ আসলে ক্ষমতা কমতেই থাকবে।

যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। তাই প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যৌ/ন রোগ কী?

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন :

১. সহ/বাসে অসমার্থতা।

২. দ্রু/ত বী/র্যপাত।

৩. অসময়ে বী/র্যপাত।

৪. সহ/বাসের আগেই বী/র্যপাত। অর্থাৎ নারীদেহ কল্পনা করলেই বী/র্যপাত হয়ে যাওয়া।

৫. প্রস্রাবের সাথে বী/র্যপাত।

৬. প্রস্রাবের বেগ হলেই বী/র্যপাত। স্বপ্নদোষ। মেহ রোগ।

৭. যৌ/নবাহিত রোগ। যেমন. গনোরিয়া, ক্লামিডিয়া, হার্পিস ইত্যাদি।

ওপরের ছয় নম্বর পর্যন্ত রোগের চিকিৎসা এক প্রকারের। আর তা হচ্ছে : নাইট কিং নিয়মিত সেবন করা। কয়েক মাস সেবন করলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

নাইট কিং খুব ভালো মানের ঔষধ। যা সেবন আপনি দ্রুত বী/র্যপাত থেকে মুক্তি পাবেন। আর সাত নম্বর রোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে দীর্ঘদিন যাবত ঔষধ সেবন করতে হবে।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

ডা.হাকীম মিজানুর রহমান 
(ডিইউএমএস)
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার
একটি বিশ্বস্ত অনলাইন
স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।
মুঠোফোন: 
চিকিৎসক) 
01762240650
(সকাল দশটা থেকে রাত্র দশটা।
নামাজের সময় কল দিবেন না।)

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়

শেয়ার করুন: