আমরা না বুঝেই এমনকিছু কাজ করি যেগুলো আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাময়িক আরাম কিংবা স্বস্তি পেতে এমনকিছু অভ্যাস গড়ে তুলি যেগুলো আমাদের অসুস্থ করে তোলে। রাতের বেলা কিছু অভ্যাস ধীরে ধীরে আমাদের শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু সেসব অভ্যাস বাদ দেওয়াও সহজ হয় না। কারণ সেগুলোতে আমরা আরাম বোধ করি।
ভালো অভ্যাস আমাদের অসুখ থেকে দূরে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। অন্যদিকে খারাপ অভ্যাস আমাদের অসুস্থ করে দেয়। কিছু কাজ বিপরীত সময়ে করলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন গোসলের সঠিক সময় হলো সকালে। এমন কিছু কাজ আছে যা রাতের বেলা করলে তা অসুস্থ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
মধ্যরাত পর্যন্ত জেগে থাকা
১০টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়া হলো সবচেয়ে উপকারী। কারণ রাত ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত হলো ঘুমের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়। এসময় মেটাবলিজম সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। সন্ধ্যা ৭-৭.৩০ এর মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিলে এবং তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলে তা আপনার হজমক্ষমতাকে ভালো রাখে। এছাড়াও এটি লিভারকে ডিটক্স করে। ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা, ওজন, খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ করার ক্ষমতা বজায় থাকে। আপনি যদি মধ্যরাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস করেন তবে তা ভিটামিনের অভাব, মানসিক সমস্যা, পেটের স্বাস্থ্য খারাপ ইত্যাদি সমস্যাকে ডেকে আনে।
রাতের খাবার দেরিতে খাওয়া
রাতের খাবার খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো সূর্যাস্তের আগে বা সূর্যাস্তের ১ ঘণ্টার মধ্যে। সর্বোচ্চ সময় সময় হলো রাত ৮টা পর্যন্ত। রাত ৯টার পর খাবার খেলে তা মেটাবলিজম ও লিভারে সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি ঘুমেও বিঘ্ন ঘটায়। রাতে দেরি করে খেলে তা অনেক রোগের কারণ হতে পারে। যেমন ডায়াবেটিস, কোলেস্টরল, স্থুলতা, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত পরিশ্রম করা
আপনার যতটুকু করার শক্তি বা সামর্থ্য আছে, ততটুকুই করুন। অতিরিক্ত পরিশ্রম আপনাকে ক্লান্ত করে তুলতে পারে। এর ফলে আপনার রক্তপাতের ব্যাধি, ডাইস্টোনিয়া, কাশি, জ্বর, অতিরিক্ত তৃষ্ণা এমনকি বমিও হতে পারে। যখন শরীরচর্চা করবেন, ঘাম বের হওয়ার পর্যন্ত করতে পারেন। এ পর্যন্তই স্বাস্থ্যকর। অত্যাধিক শরীরচর্চাও ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। আপনার শরীরে যদি পর্যাপ্ত পুষ্টি না পৌঁছায় এবং আপনি ক্ষমতার বাইরে পরিশ্রম করেন তবে বাতের সমস্যা বৃদ্ধি, টিস্যু ক্ষয় ও পেটের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
ক্ষুধা না পেলেও খাওয়া
আপনার ক্ষুধা পাওয়ার মানে হলো আগের খাবারগুলো ভালোভাবে হজম হয়েছে। কিন্তু যদি ক্ষুধা না পায় এবং আপনি কেবল লোভে পড়ে ক্ষেয়ে নেন তাহলে তা লিভারের উপর অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিশেষজ্ঞরা কেবল ক্ষুধা পেলেই খাওয়ার পরামর্শ দেন। ক্ষুধা পেলেও না খেয়ে থাকা এবং ক্ষুধা না থাকার পরেও খাওয়া- দুটিই সমান বিপজ্জনক। এতে অন্ত্রের ক্ষতি হয়।
মাল্টি টাস্কিং
মাল্টি টাস্কিংকে একটি বিশেষ গুণ বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এটি আমাদের শরীরের অতিরিক্ত কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) বাড়ায়। যা অটোইমিউন এবং লাইফস্টাইল ডিজঅর্ডারের প্রবণ করে তুলতে পারে। তাই মাল্টি টাস্কিং বা একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করার অভ্যাস বাদ দিন। একটি একটি করে কাজ শেষ করুন। সেইসঙ্গে নিয়মিত মেডিটেশন করুন। এতে আপনার কার্যক্ষমতা উন্নত হবে। কমবে স্ট্রেস। দিনশেষে থাকবেন সতেজ।