সাধারণ ভাবে বললে একটা নারীকে যদি তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। পাশাপাশি তার কাজের বা গুনের প্রসংশা করলেও একটা নারী খুশি হয়৷ যদিও এই ব্যাপারগুলো নারী পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে একটা বিষয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ। একটা নারীকে মিথ্যা প্রসংশা করলেও দারুনভাবে প্রভাবিত হয় তারা
আর্টিকেলটির নাম শুনে অনেকেই হয়ত মনে মনে ভেবেই বসেছেন, ‘মেয়েরা আর কী চাইতে পারে? দামি শাড়ি, সোনা বা হীরার অলঙ্কার, মাসের মধ্যে ১০-১৫ বার শপিং আর উপহারে ভর্তি ডালা।’
আবার অনেকে হয়ত ভেবেছেন- লম্বা-চওড়া, সুদর্শন, কোটিপতি বাবার একমাত্র সন্তানের কথা। আবার অনেকে হয়ত রবি ঠাকুরের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করে বলতে পারেন যে মেয়েরা যে আসলে কী চায় তা তো স্বয়ং ঈশ্বরও জানেন না। আসলেই কি তাই?
মেয়েদের মনের খবর জানা কি এতটাই কঠিন? তবে চলুন জেনে নিই সহজ কিছু সমাধান যা প্রত্যেক মেয়েকেই আকৃষ্ট করতে বাধ্য, তাও আবার অর্থ খরচ না করেই। আন্তরিকতা মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি আন্তরিক তথা মিশুক হয়ে থাকে। তারা যোগাযোগ রাখতে যেমন ভালবাসে তেমনি অন্যের এমন বৈশিষ্ট্যে আকৃষ্টও হয়।
তারা সাধারণত খোশ-গল্প, রোমান্টিক মুভি এবং ভালবাসা সুলভ আচরণ পছন্দ করে থাকে। তারা ছেলেদের মন ও আত্মা দুই-ই জানতে চায় আর এও চায় সে যেন তার সঙ্গীর মস্তিষ্ক ও হৃদয় উভয় স্থানেই বিরাজমান থাকতে পারে।
তাই বেশিরভাগ সময়েই মেয়েদের কাছ থেকে ‘কোথায় ছিলে?’ ‘কার সঙ্গে ছিলে?’ ফিরবে কখন? রাতে একসঙ্গে খাবে কি না এ জাতীয় প্রশ্ন লক্ষ্য করা যায়। অনেকে মনে করেন মেয়েরা তাদের সঙ্গীদের সন্দেহের বশে বা তাদের নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এমনটি করে থাকে, কিন্তু তারা আসলে ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি কোমল মনের অধিকারী হয়ে থাকে এবং সব সময়েই তার সঙ্গীর জন্য চিন্তিত থাকে আর প্রতি মুহূর্তের খবর জানতে উদগ্রীব হয়।
তাই যখনই তার প্রিয় মানুষটি তার থেকে দূরে দূরে থাকে বা তার সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত থাকে না তখন সে চেষ্টা করে তার কাছে কাছে থাকতে, তার মন ভাল করতে আর তার একাকীত্ব দূর করতে। ঠিক তেমনি ভাবে ছেলেদেরও এ বিষয়টি বোঝা উচিত যে যখন মেয়েটির মন খারাপ হয় তখন সে চায় ছেলেটি তার কাছে থাকুক, তার কথা শুনুক, তাকে বেড়াতে নিয়ে যাক বা তাকে পরম আদরে আগলে রাখুক।
মূল্যায়ন মেয়েরা যে কোন ভাল কাজের মূল্যায়ন পেতে খুব পছন্দ করে। তা যে কোন ছোটখাটো কাজের জন্যও প্রযোজ্য। যেমন- ভাল রান্নায় বা প্রিয় মানুষটির জন্য আলাদা কিছু রান্না করলে তার প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার কিন্তু সেই। তা ছাড়া যে কোন খুঁটিনাটি কাজ যেমন- অফিসে যাওয়ার সময় মানি ব্যাগ, টাই, রুমাল এগিয়ে দিলে তাকে ধন্যবাদ দেয়া বা হাসিমুখে ভালবেসে তাকে এমন কোন কথা বলা যাতে সে খুশি হয়ে যায়।
সব মেয়েই তাদের সৌন্দর্যের তারিফ শুনতে ভালবাসে, তাই বলে যে প্রতিদিনই তাদের রূপের আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিতে হবে তা কিন্তু নয়। খুঁজে বের করুন আপনার সঙ্গীর কোন দিকটি বাকি সবার থেকে আলাদা, সেটি তার কাছে প্রকাশ করুন। হতে পারে কারও চোখ, কারও চুল, কারও হাসি- যা আপনাকে মুগ্ধ করেছে, তুলে ধরুন সেগুলো তার কাছে।
হতে পারে আপনার সঙ্গী গান জানেন, বা নাচতে পারেন অথবা তার লেখালেখির হাত ভাল, নয়ত সে রান্নায় পটু- যার যাই থাকুক না কেন তার সেই গুণের মূল্যায়ন করা আপনার কর্তব্য, এতে করে আপনার প্রিয় মানুষটি তার সেই কাজে আর অনেক বেশি আগ্রহ পাবে; সেই সঙ্গে আপনার প্রতি তার ভালবাসা ও শ্রদ্ধা বেড়ে যাবে বহু গুণে।
নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে- সব মেয়েরাই নিরাপদ আশ্রয় চায়, তারা সব সময়ই চায় তাদের স্বামী বা সঙ্গীই হোক তাদের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। বাচ্চারা যেমন মায়ের বুকে সবচেয়ে নিরাপদ অনুভব করে মেয়েরাও তেমনি তার প্রিয় মানুষটির কাছেই সেই নিরাপত্তা আশা করে থাকে। তারা বাইরে থেকে যতই কঠোর বা কাঠখোট্টা ভাব দেখাক না কেন ভেতর দিকে তারা ততটাই বাচ্চা সুলভ, যে কিনা চায় যে আপনি তার খেয়াল রাখুন।
তাকে বুঝতে দিন, নিশ্চিত হতে দিন যে সব সময় আপনি তার পাশে আছেন। যানবাহন থেকে নামার সময় নিজের হাতটি বাড়িয়ে দিন, রাস্তা পারাপারের সময় হাত ধরে পার করুন, মাঝে মাঝে দরজা খুলে দিন কিংবা সে খোলার ক্ষেত্রে তার হ্যান্ডব্যাগ বা মোবাইলটি নিজের কাছে রাখুন, বিশেষ দিনগুলোতে যেমন- তার জন্মদিন বা আপনাদের বর্ষপূর্তিতে তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার চেষ্টা করুন।
সময় পেলে একসঙ্গে লাঞ্চ করতে চলে আসতে পারেন। এগুলোর একটাও খুব বেশি কঠিন কাজ নয়, আর অনেক বেশি ব্যয়বহুল বা সময়সাপেক্ষও নয়, কিন্তু এ কাজগুলোতে মেয়েরা অনেক বেশি খুশি তথা পরিতৃপ্ত হয়; যাতে প্রেম, ভালবাসা আর আগামীর পথচলা হয় সুমধুর।